চৈত্র মাস মানেই শিব পুজোর মাস। ভোলেবাবার ভক্তদের নাচে-খেলায় মেতে ওঠে পাড়া-গ্রাম। রাজ্যজুড়ে জেলায় জেলায় এই ছবি ধরা পড়ে। শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয় চড়ক মেলা। যুগ যুগ ধরে রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকা ও মানব কল্যাণের জন্য চৈত্র সংক্রান্তির মাধ্যমে শিবের আরাধনা করা হয়। এজন্য গোটা চৈত্র মাসে শিব ভক্তরা হলুদ-মশলা ছাড়া নিরামিশ খাবার খান। চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহ ধরে উপবাস থেকে সন্ন্যাসীরা কাঠের তৈরি দেল নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় গ্রামে-গ্রামে পায়ে হেঁটে নেচে গেয়ে ভগবান শিবের আরাধনা করেন। বিভিন্ন গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষে সংগ্রহ করেন। চৈত্র মাসের শেষ দিন শিব পূজা বা চড়ক পূজার মধ্যে দিয়ে এর পরিসমাপ্তি ঘটে।
চোপড়া ব্লকের তিনমাইল রোড এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা নারায়ণ সন্ন্যাসী এবনং সর্ব পোদ্দার, প্রায় ২৫ বছর ধরে এই আয়োজন করে আসছেন। একই ভাবে রাজগঞ্জ ব্লকের ফাটাপুকুরে দিলিপ সরকার পূর্বপুরুষের ধারা বজায় রেখে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছেন। ফাটাপুকুর নিবাসি দিলিপ সরকার বলেন, এলাকায় প্রায় ২৪ বছর ধরে এই আয়োজন হয়। বাবা-ঠাকুরদার হাত দিয়ে শুরু হয়। সেই ধারা বজায় রাখার চেষ্টা চলছে। আগে এক মাস ধরে এই আয়োজন হত। তবে বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তাই মাস শেষের সপ্তাহেই ধুম ধাম করে শিব পুজোর আয়োজন করা হয়। এসময় প্রতি রাতেই সন্ন্যাসীরা নাচে মেতে ওঠেন। মাথায় শিব ঠাকুরের আসন নিয়ে বিভিন্ন বাড়িতে যান। শেষের কয়েকটা দিনে হাজারি ভোগ, সন্ন্যাসী নাচ, নীল পুজো, সন্ন্যাসী সেবা ইত্যাদি হয়। বিভিন্ন জায়গায় শেষে চরক ঘোরানো হলেও এখানে সেই আয়োজন হয় না। একক পারিয়ারিক উদ্যোগে সীমিত পরিসরে পূজার আয়োজন করা হয়। এখানে পূজা দেখতে আশপাশের গ্রামের মানুষ আসেন।