রাজগঞ্জ: সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজগঞ্জে বিজেপির নেতৃত্বের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের আভাস পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল। দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীরই ক্ষোভের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপেও। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে যেখানে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা, সেখানে এধরনের ঘটনাকে ঘিরে চরম অস্বস্তিতে রাজগঞ্জের বিজেপি নেতৃত্ব। রাজগঞ্জের দক্ষিণ মন্ডলের বিজেপির যুব মোর্চার কর্মী শ্যামল রায় বেশ কিছুদিন ধরেই নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লাইভে এসে মন্ডল সভাপতি বিধান ঝাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠিক নানান অভিযোগ ক্ষোভাকারে উগরে দিচ্ছেন। এরইমধ্যে, বুধবার রাজগঞ্জের কালিনগরে নতুন করে বিজেপির পার্টি অফিস উদ্বোধন করে আবারও বিতর্ক তৈরি হল। এপ্রসঙ্গে, আগেরমতই মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শ্যামলবাবু। তাঁর অভিযোগ, মন্ডল সভাপতি হিসেবে বিধান ঝাঁয়ের কোনও যোগ্যতাই নেই। তিনি তৃণমূলের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে চলেছেন বলে অভিযোগ। তাঁর সভাপতিত্ব নিয়েও শ্যামলবাবুর অভিযোগ, দীর্ঘ ৯ বছর ধরে একই পদে বহাল রয়েছেন কোন নিয়মে? শ্যামলবাবুর অভিযোগ, যোগ্য দলীয় কর্মীদের কোনওরকম সম্মান দেওয়া হচ্ছে না। অথচ অকেজো কিছু দলীয় কর্মীরা নিজেদের ব্যক্তিগত সুবিধা পেতে দলীয় নেতৃত্বের কথায় সায় দিয়ে চলেছেন। অন্যদিকে, গত ৬ তারিখ রাজগঞ্জের কালিনগরে বিজেপির পার্টি অফিস উদ্বোধনে চলে আসেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব পলেন ঘোষ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মন্ডল সভাপতি বিধান ঝাঁও। যদিও বুধবারের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করা সত্ত্বেও মন্ডল সভাপতি বিধান ঝাঁ উপস্থিত ছিলেন না বলে অভিযোগ শ্যামল বাবুর। এব্যাপারে মন্ডল সভাপতি বিধান ঝাঁ এবং বিজেপির জেলা যুব মোর্চা সভাপতি পলেন ঘোষ জানান, শ্যামল রায় বিজেপি দলের কর্মী নন এবং কোনও পদেও নেই। বিজেপির দলীয় পতাকা নিয়ে সংগঠন করলেই তাঁকে দলে জায়গা দেওয়া হবে এমন কোনও ব্যাপারও নেই। বিধান ঝাঁ জানান, শ্যামল রায় এবং তাঁর সঙ্গে যেসকল লোকজনেরা রয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগই অসামাজিক কাজকর্ম এবং তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত। খারাপ কাজের জন্য আগেই তাঁদের দল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সুবিধা পেতেই তাঁরা এ ধরনের কাজ করে চলেছেন বলে দাবি মন্ডল সভাপতির। পরপর তিন বারের সভাপতি হওয়া প্রসঙ্গে বিধানবাবু জানান, দলের সাংগঠনিক নিয়ম মেনেই তাঁকে সভাপতির পদে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে বাইরের কোনও লোকের কোনও বক্তব্যই গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রত্যেকেই অস্বীকার করেছেন। বিজেপির দক্ষিণ মন্ডল সভাপতি বিধান ঝাঁ এবং বিজেপি কর্মী শ্যামল রায় পরস্পরের বিরুদ্ধে তৃণমূলের এজেন্ট হয়ে কাজ করার অভিযোগ এনেছেন। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এটি সম্পূর্ণ তাঁদের আভ্যন্তরীণ বিষয়। তৃণমূলের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই। যদিও, নির্বাচনের আগে এ ধরনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম অস্বস্তিতে রয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।