চিনে এসসিও সম্মেলনের প্রাক্কালে মোদির সফর, গালওয়ান স্মৃতি, মার্কিন চাপ ও পারমাণবিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা—সব মিলিয়ে অগ্নি-৫ উৎক্ষেপণ ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার ঝড়।
নয়াদিল্লি: এসসিও সম্মেলনের ঠিক আগে ভারতের অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ২০ আগস্ট ওড়িশার চাঁদিপুরের ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয় ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল ‘অগ্নি-৫’। স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ডের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ প্রযুক্তিগত ও কৌশলগতভাবে সফল হয়েছে বলে প্রতিরক্ষা সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই উৎক্ষেপণের সময়কাল এবং প্রেক্ষাপট বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই মাসেই চিন সফরে যাচ্ছেন। তার আগে এই উৎক্ষেপণকে বিশেষজ্ঞরা দেখছেন একটি কৌশলগত বার্তা হিসেবে—যা আলোচনার টেবিলে ভারতের অবস্থানকে দৃঢ় করে। ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত। সেই বাস্তবতায় এই উৎক্ষেপণ ভারতের প্রস্তুতির ধারাবাহিকতা হিসেবেই উঠে আসে।
অগ্নি-৫ মিসাইলের পরিসীমা ৫,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি, ফলে ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী চিন ও পাকিস্তান—উভয়ই এর আওতায় পড়ে। গবেষণা অনুযায়ী, চিনের কাছে রয়েছে প্রায় ৬০০ পারমাণবিক বোমা, ভারতের কাছে রয়েছে ১৮০টি। এই পারমাণবিক ভারসাম্যের প্রেক্ষাপটে অগ্নি-৫ উৎক্ষেপণ প্রতিরক্ষা কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
পাকিস্তানের অস্ত্র আমদানির ৮১ শতাংশই আসে চিন থেকে। ফলে এই উৎক্ষেপণ শুধু চিন নয়, পাকিস্তানকেও বার্তা দেয় যে ভারত তার প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিতে পিছিয়ে নেই। অন্যদিকে, গত সপ্তাহেই চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই ভারত সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এসসিও সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন।
এই সম্মেলনে ভারত-চিন-রাশিয়া একত্রে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন অর্থনৈতিক চাপ দুই এশীয় শক্তিকে কাছাকাছি আসতে বাধ্য করছে। তবে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি ও কূটনৈতিক আলোচনার এই যুগলবন্দি ভারতের বহুমাত্রিক কৌশলেরই প্রতিফলন।
- সন্ধ্যার আকাশে অগ্নি-৫-র উৎক্ষেপণ! পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র কি শুধু প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি? নাকি শক্তির প্রদর্শন? জোর আলোচনা আন্তর্জাতিক মহলে।