তাওয়াংয়ের পরিস্থিতি নিয়ে কার্যত চিনাকে হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ‘ভারতকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না’, ‘এক ইঞ্চিও জমি ছেড়ে দেবে না ভারত’, নাম না করে চিনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ।
৯ ডিসেম্বর অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংয়ে ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় চিনের সেনা। পরবর্তী হামলার আশঙ্কায় সীমান্ত এলাকায় সতর্কতা জারি করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে স্থলসেনা, নৌসেনা ও বায়ুসেনার প্রধানেরা বৈঠক করেছেন। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাফ হুঁশিয়ারি, ‘মোদি সরকারের আমলে ভারতের এক ইঞ্চি জমিও কেউ দখল করতে পারবে না।’
সম্প্রতি ঋষি অরবিন্দের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্য একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত আসলে অমরত্বের বীজের মতো; কঠিন পরিস্থিতিতেও ভারতকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না।’ প্রসঙ্গ ও নাম উল্লেখ না করেও চিনের উদ্দেশেই প্রধানমন্ত্রী এই বার্তা দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই ভারত-চিন সীমান্ত লঙ্ঘনের চেষ্টা করছে চিন। ইতিমধ্যেই ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্তের বেশকিছু এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চিনের সরকার। গালওয়ানের ঘটনার পর এবার অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে সীমান্ত লঙ্ঘনের চেষ্টা করে চিনের সেনা। যদিও ভারতীয় সেনার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে অচিরেই চিনাদের থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (LAC) কাছে চীনা বিমানের কার্যকলাপ লক্ষ করে পাল্টা হিসেবে ভারতীয় বায়ু সেনার টহলদারি শুরু হয়ে গিয়েছে। তাওয়াঙ্গের ঘটনার পর মঙ্গলবার সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, তাওয়াং সংঘর্ষে ভারতীয় সেনাদের কেউ হতাহত হয়নি। ঘটনার ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে কেন্দ্রের।
তাওয়াংয়ের ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে শোরগোল পরে গিয়েছে। এরমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। কিছু পুরনো ভিডিও সামনে এসেছে, যেখানে চিনা বাহিনীকে ঘিরে আক্রমণ করছে ভারতীয় সেনা জওয়ানেরা। যদিও ভাইরাল ভিডিওটি নিয়ে কোনও প্রশাসনিক বক্তব্য মেলেনি।
কেউ দাবি করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি সাম্প্রতিক তাওয়াং সংঘর্ষের নয়। এই ভিডিয়োটি পুরনো। ভারত-চিন সংঘর্ষের ২০২১ সালের ভিডিয়ো এটি। আবার কারও দাবি, ২০২০ সালের মে মাসের ভিডিয়ো এটি। আসলে লাদাখ সীমান্তের পাশাপাশি অরুণাচল সীমান্তেও বার বার চিনা অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। কারণ, চিন কখনওই অরুণাচলকে ভারতের অংশ বলে মানতে চায় না।