একটি হাত না থাকায় কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের দু’মাসের ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাবা-মা। কোনওরকমে উদ্ধার করে সেই ছেলেকে রত্ন তৈরি করেছেন মাসি। একটি হাত নেই, তাতে কি? জীবনযুদ্ধে থেমে না গিয়ে সাফল্য পেয়েছেন বডিবিল্ডিংয়ে। এক হাতের জোরেই বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় সাফল্য আসে, দু’বার হয়েছেন মিস্টার দিল্লি। পাশাপাশি কোচিং করিয়ে সংসারের খরচ চালান। তবে করোনা কালে বন্ধ হয়ে যায় কোচিং। কিন্তু দমে না গিয়ে, খোলেন খাবারের দোকান। সেই ছেলে আজ ‘চিকেন টিক্কা কিং’ বলে পরিচিত। ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করেন চিকেন টিক্কা। তার জীবন যুদ্ধে সাফল্যের গল্প ছড়িয়ে পড়েছে দিল্লিবাসীর মুখে মুখে।
এই গল্পের নায়কের নাম তেজিন্দর মেহরা। হাত না থাকায় জন্মের দু’মাস পর তার বাবা-মা তাকে হিজড়েদের কাছে মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। তাকে উদ্ধার করে ছোট থেকেই খুব কষ্ট করে মানুষ করেছিলেন মাসি! আর্থিক সঙ্গতি না থাকলেও পড়াশোনা করেন তেজিন্দর। যদিও, পরে পড়াশোনা ছেড়ে সংসারের খরচ জোগাতে কাজ খুঁজতে শুরু করেন তিনি। চাকরি খোঁজার পাশাপাশি জিমের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন তেজিন্দর। শুরু হতে থাকে তাঁর জিমের কেরিয়ার! ২০১৬ সালে তাঁর কোচ দীনেশ তেজিন্দরকে মিস্টার দিল্লি প্রতিযোগিতায় নাম লেখানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। তেজিন্দর সেখান নিজের নাম নথিভুক্ত করেন এবং জয়লাভ করেন। শুধু তাই নয়, তেজিন্দর ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে ধারাবাহিকভাবে সেটি জয়লাভ করেন। এরপর লকডাউনে জিম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ৩০ হাজার টাকা ধার করে ব্যবসা শুরু করেন তেজিন্দর। সেখানেও বাজিমাত, বর্তমানে চিকেন টিক্কা কিং নামে সবার মুখে মুখে ঘুরছে তেজিন্দরের নাম। হাল ধরে থাকলে বাঁধা বিপত্তি পেরিয়েও সফল হওয়া যায়, তারই প্রমান তেজিন্দর।