পরপর ২ কন্যাসন্তানের জন্ম! ফের বিয়ে করলেন স্বামী, সন্তান কোলে থানায় হাজির স্ত্রী

বছর দশেকের সংসারে পরপর দুই কন্যাসন্তানের জন্ম ঘিরে অশান্তি। এর জেরে আবারও বিয়ে করে নতুন বৌ ঘরে তুলেছেন স্বামী। এমন অভিযোগ নিয়ে দুই সন্তান কোলে থানায় হাজির হলেন এক মহিলা। রাজগঞ্জের সুখানি অঞ্চলের সাহেবপাড়া এলাকার ঘটনা।

অভিযোগকারী সাহেরা বানু জানান, পরপর দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা। গৃহবধূর ওপর শুরু হয় মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন। গত ১৪ জুন এমনই অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন তিনি। সেই ঘটনার পর দুই মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে আসেন। তবে ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। কয়েক মাস পর ২ শিশুকন্যাসহ স্ত্রী সাহেরাকে একপাশে রেখে আবারও বিয়ে করে নববধূ ঘরে তুলেছেন স্বামী আবুবক্কর সিদ্দিক। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ফের থানায় এলেন সাহেরা বানু।

রাজগঞ্জ ব্লকের সুখানি অঞ্চলের বৈরাগীপাড়া এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। শ্বশুরবাড়ির বিরূদ্ধে অভিযোগ নিয়ে থানার দ্বারস্থ হলেন গৃহবধূ সাহেরা বানু। সাহেরা জানান, শুরুতে সব ঠিক থাকলেও পরপর দুই কন্যা সন্তান হওয়ায় তার উপর মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। এ বিষয়ে এলাকায় সালিশির মাধ্যমে মিটমাট করার সিদ্ধান্ত হলেও বাস্তবে কোনও ফল হয়নি। তারপর হঠাৎ করে এই সোমবার নতুন করে তার স্বামীর বিয়ের খবরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে সাহেরা বানু এবং তার পরিবার।

রাজগঞ্জের সুখানি অঞ্চলের সাহেবপাড়া এলাকার মেয়ে সাহেরা বানু গত ১০ বছর আগে বৈরাগীপাড়া এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। স্বামী কাজের সূত্রে কেরালায় কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে। দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন সাহেরা বানু। বর্তমানে তাদের বয়স ৩ বছর এবং ৫ বছর। মেয়ে হওয়ার পর থেকেই সংসারে অশান্তি শুরু হয় বলে অভিযোগ।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজগঞ্জ থানায় ফের লিখিত অভিযোগ জমা করেছেন সাহেরা ও তার পরিবার। সাহেরার ভাই বলেন, বিবাহিত একজন স্ত্রী থাকার পরেও আরো একজন মহিলাকে বিয়ে করে ঘরে তুলেছেন অভিযুক্ত ব্যক্তি, সম্পর্কে তার জামাইবাবু আবু সিদ্দিক। লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, বিয়ের সময় দাবি মেনে ‘একগাদা যৌতুক’ দেওয়া সত্ত্বেও শ্বশুরবাড়ির তরফে ভালো ব্যবহার মেলেনি বলে অভিযোগ। কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকেই অশান্তি চরমে ওঠে। পরে নতুন করে বিয়ে করে ঘরে অন্য এক মহিলাকে ‘ঘরে তুলেছে’ বলে অভিযোগ নিয়ে থানায় হাজির হয়েছেন সাহেরার পরিবার।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ওই মহিলার শ্বশুর গমিরুদ্দিন মহম্মদ জানান, ছেলের নতুন বিয়ের বিষয়টি তিনি জানেন না। কেরালায় কাজে কেরালায় থাকে। পরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন তোলেননি অভিযুক্ত পরিবারের লোকেরা।

এ বিষয়ে সুখানি অঞ্চলের প্রধান শম্পা দত্ত জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে ইতিবাচক প্রস্তাব মেনে নেওয়ার কথা থাকলেও এখনও সেই কথা রাখেননি অভিযুক্ত পরিবার। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের তরফে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে রায় জানিয়েছেন তিনি।

About The Author