কেরলের কাজে গিয়ে গণপিটুনিতে প্রাণ হারান এক পরিযায়ী শ্রমিক। নিহতের নাম রাম নারায়ণ বাঘেল (৩৫), তিনি ছত্তীসগড়ের বাসিন্দা।
রবিবার রাতে পালাক্কাড জেলার ওয়ালায়ার এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাঁকে ঘিরে ধরে প্রথমে প্রশ্ন করে, “তুই বাংলাদেশি?” এরপরই শুরু হয় বেধড়ক মারধর।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কেউ চড় মারছে, কেউ ঘুষি দিচ্ছে, আবার কেউ হাসতে হাসতে আঘাত করছে। মারধরের মধ্যেই রাম নারায়ণ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং রক্ত বমি শুরু হয়। তাঁকে দ্রুত পালাক্কাড জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, পরে থ্রিসুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হলেও সেখানেই মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তে শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত চুরির অভিযোগ থেকে। তবে নিহতের কাছ থেকে কোনও চুরি যাওয়া সামগ্রী উদ্ধার হয়নি। এদিন চুরির সন্দেহে রাম নারায়ণের ওপর মারধর শুরু হয়। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ব্যক্তির মাথায় চোট ছিল।
এখন পর্যন্ত কেরলের ওয়ালায়ার গণপিটুনির ঘটনায় মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রথমে স্থানীয় পুলিশ ৫ জনকে আটক করেছিল, পরে বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এখনও অন্তত ৮ জন অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে।
ঘটনার পর ক্ষুব্ধ পরিবার দেহ গ্রহণে অস্বীকার করেছে। তাঁদের দাবি, মামলাটি তফসিলি জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনে রুজু করতে হবে এবং ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ইতিমধ্যেই বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহল বলছে, এটি নিছক লিঞ্চিং নয়, বরং পরিচয়ভিত্তিক ঘৃণার ফল।

