কলকাতা: বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ ধীরে ধীরে শক্তি বাড়িয়ে স্থলভাগের দিকে এগোচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, শনিবার ভোরে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। রবিবার তা আরও গভীর নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। সোমবারের মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এবং মঙ্গলবার সকালে তা প্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনম ও কলিঙ্গপতনমের মাঝামাঝি কাকিনাড়ার কাছে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে।
আবহাওয়া দফতরের হিসেব অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার হতে পারে, দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছাতে পারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত। বর্তমানে নিম্নচাপটি অবস্থান করছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পোর্ট ব্লেয়ার থেকে প্রায় ৪৪০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে। বিশাখাপত্তনম, চেন্নাই, কাকিনাড়া ও গোপালপুর—সবকটি উপকূল থেকে এটি ৯৭০–১০৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রবিবার কোনও জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকলেও সোমবার থেকে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে হালকা বৃষ্টি শুরু হতে পারে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম—এই জেলাগুলিতে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে হালকা বৃষ্টির পাশাপাশি ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। এই জেলাগুলিতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গেও মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, আলিপুরদুয়ার—এই জেলাগুলিতে কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বুধবার জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুরে ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারও উত্তরবঙ্গের আট জেলায় সতর্কতা থাকবে।
মৎস্যজীবীদের মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ ও পরিকাঠামো বিভাগকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া দফতর পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে এবং প্রয়োজন হলে আরও সতর্কতা জারি করা হবে।
About The Author
