স্কুলের প্রধান শিক্ষককে মারধর, গ্রেপ্তারির পরই জামিন পেলেন তৃণমূল নেতা

কাকদ্বীপে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম ত্রিদিব বাড়ুই। বুধবার কাকদ্বীপ স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জামিন পেয়ে গেল অভিযুক্ত।

জানা গেল, কাকদ্বীপের বীরেন্দ্র বিদ্যানিকেতন বিদ্যালয়ে শিক্ষাসফরের তহবিল সংগ্রহকে কেন্দ্র করে ঘটে চাঞ্চল্যকর ঘটনা। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিলনকান্তি পালের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য তথা স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি ত্রিদিব বাড়ুইয়ের মধ্যে তীব্র বচসা হয়।

অভিযোগ, শিক্ষককে মিথ্যা অভিযোগপত্রে সই করাতে চাপ দেন ত্রিদিববাবু। শিক্ষক অস্বীকার করায়, অফিসঘরেই শুরু হয় মারধর। পরে কলার ধরে বিদ্যালয়ের বাইরে টেনে বের করে দেওয়া হয় শিক্ষককে।

এই ঘটনার ভিডিও মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। শিক্ষক বর্তমানে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি, তাঁর হাত ও গলায় আঘাত রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

বুধবার কাকদ্বীপ স্টেশন থেকে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ত্রিদিব বাড়ুইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি জামিনে মুক্ত হন।

অভিযুক্ত অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেছেন, “শিক্ষক বেআইনিভাবে টাকা তুলছিলেন। আমি রসিদের দাবি করতেই উনি কাগজ ছিঁড়ে ফেলেন এবং আমাকেই মারধর করেন।”

ঘটনাটি ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিজেপি এবং সিপিএম তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছে। বিজেপির রাজ্য নেতা সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “বিদ্যালয় এখন আতঙ্কের জায়গা হয়ে উঠেছে। শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।” সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষের মন্তব্য, “এই সরকার থাকলে এরকম ঘটনা বারবার ঘটবে। শিক্ষকরা হেনস্থার শিকার হচ্ছেন।”

তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা জানিয়েছেন, “তদন্ত চলছে। দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনায় শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষক সমাজের একাংশের মতে, বিদ্যালয় পরিচালনায় রাজনৈতিক নেতাদের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ শিক্ষার পরিবেশকে নষ্ট করছে।

About The Author