পূর্ব বর্ধমানের সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একযোগে আক্রমণ শানালেন জাতীয় নির্বাচন কমিশন ও বিজেপিকে। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে পাশে বসিয়ে তিনি বলেন, “ইলেকশন কমিশন, আপনাকে অনেক প্রণাম জানাই, অনেক সেলাম জানাই। দয়া করে বিজেপির ললিপপ হবেন না। তা হলে দেশের মানুষ ক্ষমা করবে না।”
এই মন্তব্যের পটভূমিতে রয়েছে চার রাজ্য সরকারি আধিকারিককে ঘিরে কমিশনের সঙ্গে রাজ্যের টানাপোড়েন। ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগে কমিশনের নির্দেশে তাঁদের সাসপেন্ড করা হলেও, মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন কাউকে বরখাস্ত করতে দেবেন না। বাস্তবে অবশ্য চার জনকেই সাসপেন্ড করতে হয়, যদিও এফআইআর দায়েরের বিষয়ে রাজ্য সময় চেয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি জানান, ভিন্রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া ২২ লক্ষ বাংলাভাষী শ্রমিকের উপর কোনও দয়া দেখানো হয়নি। বরং তাঁদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে এখন লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে। গুজরাতে শিকল বেঁধে শ্রমিকদের তাড়ানোর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “বাংলার মেধাকে তাড়াতে পারে না। ওঁদের ছাড়া হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড চলে না।”
পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “ফিরে আসুন। গাড়িভাড়া বাবদ ৫ হাজার টাকা পাবেন। পোর্টাল করে দেওয়া হয়েছে। বিডিও-র কাছে নাম লেখালেও হবে। ‘খাদ্যসাথী’ কার্ড পাবেন, বিনা পয়সায় রেশন পাবেন। বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য কোনও পয়সা লাগবে না। যে ক্লাসে পড়ত, এখানকার স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হবে।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে প্রশাসনিক স্তরে কমিশনের নির্দেশ মানলেও রাজনৈতিক আক্রমণ জারি রাখার কৌশল স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতার বার্তা দিলেন তিনি।