টাকা দিতে না পারায় চিকিৎসা হয়নি, মৃত সন্তানকে ব্যাগে করে ডিএম অফিসে বাবা, সিল হল হাসপাতাল

বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসার আগে টাকা চাওয়ার অভিযোগে নবজাতকের মৃত্যু। মৃত শিশুকে ব্যাগে করে ডিএম অফিসে হাজির বাবা।

লখিমপুর খেরি: এক হৃদয়বিদারক ঘটনা দেখল দেশ। লখিমপুর খেরির জেলা শাসকের দপ্তরে ব্যাগে করে মৃত নবজাতকের দেহ নিয়ে হাজির হলেন এক শোকাহত বাবা। ঘটনাটি মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়, জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে।

বাবা বিপিন গুপ্ত অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রীকে প্রসবের জন্য গোলদার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শুরুতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১০,০০০ টাকা চেয়েছিল স্বাভাবিক প্রসবের জন্য, আর সিজারিয়ান হলে ১২,০০০ টাকা। কিন্তু প্রসবের সময় যত এগোতে থাকে, হাসপাতাল ক্রমাগত বাড়াতে থাকে খরচের অঙ্ক।

রাত ২:৩০টা নাগাদ বিপিন কিছু টাকা জোগাড় করলেও, হাসপাতাল ফের টাকা বাড়িয়ে পুরো টাকা না পেলে চিকিৎসা শুরু করবে না বলে জানিয়ে দেয়। বিপিন অনুরোধ করেন, চিকিৎসা শুরু করতে, তিনি বাকি টাকা পরে দেবেন। কিন্তু তাঁর দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনড় ছিল—”টাকা না দিলে অপারেশন হবে না।”

এই টালবাহানির মধ্যেই মৃত্যু হয় নবজাতকের। বিপিন আরও অভিযোগ করেন, “শিশুর মৃত্যুর পর আমার স্ত্রীকে রাস্তায় ফেলে দেয় হাসপাতাল।” পরে তাঁরা এক বেসরকারি সার্জনের সাহায্য নেন।

শেষ আশ্রয় হিসেবে বিপিন পৌঁছান জেলা শাসকের দপ্তরে—”আমি ব্যাগে করে আমার মৃত সন্তানকে নিয়ে ডিএম-এর কাছে যাই। তিনি আমার সঙ্গে হাসপাতালে আসেন।”

জেলা প্রশাসন ঘটনার গুরুত্ব বুঝে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। জেলা শাসক এক্স-এ লেখেন, “নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় গোলদার হাসপাতাল সিল করা হয়েছে। ভর্তি রোগীদের জেলা মহিলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে। প্রসূতির চিকিৎসার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে আছে।”

ADM একে রস্তোগি সৃজন হাসপাতালে গিয়ে প্রসূতির শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন এবং উন্নত চিকিৎসার নির্দেশ দেন। বর্তমানে হাসপাতালটি সিল করা হয়েছে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে।

About The Author