রাশিয়ার থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট (Donald Trump) । এই সিদ্ধান্তে শুধু ভারত নয়, ক্ষুব্ধ হয়েছেন তাঁরই দলের প্রাক্তন নেতারা। রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রাক্তন মার্কিন অ্যাম্বাসাডর (Nikki Haley) সরাসরি ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ওয়াশিংটন ও নয়া দিল্লির সম্পর্ক ভাঙনের মুখে, এবং তা দ্রুত ঠিক করা প্রয়োজন।
নিকি হেইলি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ভারতকে (India) চিনের (China) মতো প্রতিপক্ষ হিসাবে বিচার করলে চলবে না। ট্রাম্প প্রশাসন যেমন শুল্ক চাপিয়ে ভারতকে চাপে ফেলছে, তেমনই ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে (India-Pakistan Conflict) আমেরিকার মধ্যস্থতার দাবি তুলে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে।
২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের হয়ে প্রচার করেছিলেন নিকি হেইলি। কিন্তু সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে তিনি ক্ষুব্ধ। তাঁর মতে, ভারতকে গণতান্ত্রিক অংশীদার (Democratic Partner) হিসাবে দেখা উচিত, চিনের মতো প্রতিপক্ষ নয়। তিনি বলেন, “চিন এতদিন রাশিয়ার থেকে তেল কিনলেও শুল্কের খাঁড়া এড়িয়ে গিয়েছে। অথচ ভারতকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।”
নিকি হেইলি আরও বলেন, “যদি আমেরিকা চিনের বাণিজ্যিক আগ্রাসন (Trade Aggression) রুখতে চায়, তবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আগের মতো করতে হবে। চিনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের মতো বন্ধুর প্রয়োজন।”
সম্প্রতি ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। একদিকে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে আমেরিকার মধ্যস্থতার প্রস্তাব ভারত খারিজ করেছে। অন্যদিকে, ট্রাম্প ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন, যা পরে আরও ২৫ শতাংশে পৌঁছেছে।
নিকি হেইলির মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের মূল লক্ষ্য চিনকে প্রতিযোগিতায় হারানো এবং শান্তি অর্জন। কিন্তু সেই পথে যেতে হলে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ককে ঠিক রাখতে হবে।
চিন থেকে আমদানি বন্ধ করতে বা সাপ্লাই চেইন (Supply Chain) সরিয়ে নিতে ভারতের সাহায্য প্রয়োজন। হেইলি বলেন, “আমেরিকায় উৎপাদন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে, কিন্তু চিনের মতো বিপুল উৎপাদন ক্ষমতা একমাত্র ভারতেরই আছে। জামাকাপড়, কমদামী ফোন, সোলার প্যানেল—এসব ক্ষেত্রে ভারতের উপরই ভরসা করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘমেয়াদে ভারতের গুরুত্ব বাড়বে। চিনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি কমছে, শ্রমশক্তি বুড়ো হচ্ছে। অথচ ভারতের যুব কর্মক্ষমতা (Youth Workforce) রয়েছে। গণতান্ত্রিক ভারত (Democratic India) বিশ্বকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে না, বরং চিনের আধিপত্য কমাবে।