ভারত-চীন সম্পর্কের নয়া অধ্যায়: সীমান্ত সমস্যা মেটাতে যৌথ উদ্যোগ, বাণিজ্য ও যাত্রা পুনরায় শুরু

নয়াদিল্লি: দীর্ঘদিনের উত্তেজনার পর অবশেষে ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi), বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S. Jaishankar) এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল (Ajit Doval)–এর সঙ্গে বৈঠক করেন চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই (Wang Yi) । সেই বৈঠকের পরই দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত নির্ধারণ (Boundary Delimitation) সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত সমাধানে একটি বিশেষজ্ঞ দল (Expert Group) গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই দল কাজ করবে ‘Working Mechanism for Consultation and Coordination on India-China Border Affairs (WMCC)’–এর অধীনে। সীমান্ত নির্ধারণের ক্ষেত্রে ‘Early Harvest’ অর্থাৎ প্রাথমিক অগ্রগতি অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করবে এই দল। উল্লেখযোগ্যভাবে, সীমান্ত নির্ধারণ বলতে এখানে কোনও স্থায়ী চিহ্ন নয়, বরং রাজনৈতিক ও আইনি ভিত্তিতে সীমারেখা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে।

অজিত ডোভাল ও ওয়াং ই–এর মধ্যে অনুষ্ঠিত ২৪তম ‘Special Representatives (SR) Dialogue’–এ জানানো হয়, কাজানে (Kazan) দুই দেশের নেতাদের মধ্যে যে ঐকমত্য হয়েছিল, তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। ২৩তম SR বৈঠকের পর থেকে সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রয়েছে বলেও দুই পক্ষ মত প্রকাশ করে।

দুই দেশ সম্মত হয়েছে, পূর্ব ও মধ্য সেক্টরে নতুন ‘General Level Mechanism’ গঠন করা হবে, যাতে সীমান্তে উত্তেজনা কমিয়ে শান্তি বজায় রাখা যায়। পশ্চিম সেক্টরে এই ব্যবস্থা আগে থেকেই চালু রয়েছে।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদির (Narendra Modi) চীন সফর এবং ‘Shanghai Cooperation Organization (SCO) Summit’–এ অংশগ্রহণের বিষয়েও আলোচনা হয়। চীন SCO–এর সভাপতিত্ব করছে এবং ভারত তার পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। পাশাপাশি, ২০২৬ সালে ভারতে এবং ২০২৭ সালে চীনে অনুষ্ঠিতব্য ‘BRICS Summit’–এর জন্য পারস্পরিক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

জনবান্ধব পদক্ষেপ হিসেবে দুই দেশ সরাসরি বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসঙ্গে, কৈলাস পর্বত ও মানসসরোবর হ্রদে (Mount Kailash and Lake Manasarovar) ভারতীয় তীর্থযাত্রার পরিসর বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে।

অর্থনৈতিক দিকেও এসেছে বড় সিদ্ধান্ত। সীমান্ত বাণিজ্য পুনরায় শুরু হবে তিনটি নির্ধারিত ট্রেডিং পয়েন্ট—লিপুলেখ পাস (Lipulekh Pass), শিপকি লা (Shipki La) এবং নাথু লা (Nathu La) দিয়ে। দুই দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহ বাড়াতে ‘Concrete Measures’ গ্রহণ করবে বলেও জানানো হয়েছে।

About The Author