জলপাইগুড়ি: ‘পোল্ট্রি ফার্ম থেকে রোগ ছড়ায়নি রাজগঞ্জের’: রিপোর্ট নেগেটিভ আসতেই পোলট্রি ফার্ম ফের সচল রাখার সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনের।
রাজগঞ্জের বিতর্কিত সাই সিবম পোল্ট্রি ফার্ম থেকে জন্ডিস বা লেপ্টোস্পাইরা-র মত রোগ ছড়ানোর অভিযোগ ছিল স্থানীয়দের একাংশের। ক্ষোভের মুখে পড়তেই সেই ফার্ম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে জলের নমুনা গিয়েছিল বেলগাছিয়া ল্যাবে। সোমবার সেই রিপোর্ট এসে পৌঁছল। তাতে নাকি রোগ সংক্রমণের কোনও হদিস মেলেনি। তাই জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের নেতৃত্বে জরুরি বৈঠক ডেকে ফের সেই ফার্ম সচল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মালিক, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আলোচনায় ভবিষ্যতের জন্য একাধিক সতর্কতা অবলম্বনের বার্তা দেওয়া হয়েছে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন (DM Shama Parveen) রিপোর্ট হাতে পেয়েই জরুরি বৈঠক ডাকেন জেলা প্রশাসনের অফিসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজগঞ্জের বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন (Krishna Roy Barman), প্রাণী সম্পদ দপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্টর ডাক্তার অভিজিৎ মন্ডল (Dr. Abhijit Mondal), স্বাস্থ্য দপ্তর-সহ একাধিক দপ্তরের আধিকারিক এবং ফার্ম কর্তৃপক্ষ।
ডাক্তার অভিজিৎ মন্ডল জানান, ‘‘পোল্ট্রি ফার্ম থেকে জন্ডিস ছড়ায় না। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে বেলগাছিয়াতে পাঠিয়েছিলাম। ফার্মের নমুনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এখান থেকে লেপ্টোস্পাইরা ছড়ায়নি।’’ তিনি আরও বলেন, অন্যান্য জায়গা থেকে সংগৃহীত নমুনার রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে রোগের উৎস ঠিক কোথায়।
সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন বলেন, ‘‘রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। ফার্ম বন্ধ হলে বহু মানুষ কাজ হারাতেন। তবে ফার্ম যাতে দূষণমুক্ত থাকে, তার জন্য কর্তৃপক্ষকে আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।’’
ফার্ম মালিক বিকাশ রেড্ডি (Bikash Reddy) জানান, ‘‘আমরা ডি এম-এর নির্দেশ মতো মুরগি স্থানান্তর শুরু করেছিলাম। আজকের বৈঠকে রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তাই ফার্ম বন্ধ না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফার্মে এক্সপার্ট টিম যাবে, আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা খুব খুশি, কারণ ৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এই ফার্ম গড়া হয়েছে। বন্ধ হলে বড় সমস্যায় পড়তাম।’’
রাজগঞ্জের চেকর মারি গ্রামে জন্ডিস ও লেপ্টোস্পাইরা রোগ ছড়িয়ে পড়ার পর সন্দেহের কেন্দ্রে উঠে এসেছিল স্থানীয় সাই সিবম পোল্ট্রি ফার্ম (Sai Sibam Poultry Farm) । গত সপ্তাহে ওই ফার্ম থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছিল বেলগাছিয়া ল্যাবরেটরিতে (Belgachia Lab) । সোমবার সেই রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে, এবং তা নেগেটিভ—অর্থাৎ ফার্ম থেকে কোনও সংক্রমণ ছড়ায়নি। এই তথ্য জানিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন প্রাণী সম্পদ দপ্তরের (Animal Resources Department) আধিকারিকেরা।