রাজগঞ্জের ঘরে ঘরে লেপটোস্পাইরা ও হেপাটাইটিসে আক্রান্ত বহু মানুষ। ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, জন্ডিসের মত লক্ষণ। যেন মহামারি লেগেছে, উদ্বেগ ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের।
সন্ন্যাসীকাটা অঞ্চলের বেশ কিছু গ্রামে লেপটোস্পাইরা এবং হেপাটাইটিস রোগের মতো উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির হিড়িক লেগেছে। গিরণগছ, চেকরমারী সহ একাধিক গ্রামে হঠাৎ করে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে জ্বর, সর্দি, জন্ডিসের মতো উপসর্গ।
অনেকেরই নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে। সম্প্রতি সেই রিপোর্টে ধরা পড়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রায় প্রত্যেকের নমুনাতেই মিলেছে লেপটোস্পাইরা এবং হেপাটাইটিস রোগের লক্ষণ। এই দুটি ব্যাক্টেরিয়া এবং ভাইরাস ঘটিত রোগ।
রবিবার প্রায় ১৪ জন রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হন। এমন অবস্থা হয়েছে যে অতিরিক্ত বেড মিলছে না। ওই গ্রাম থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল এবং আশেপাশের বেসরকারি হাসপাতাল গুলিতেও ভর্তি হচ্ছেন অনেকেই। এই ঘটনায় মারাত্মক উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর।
রবিবার ওই গ্রামগুলিতে আবারো মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়। সেখানে স্থানীয়দের ভিড় উপড়ে পড়ে। কি কি লক্ষণ? জানা গেল, প্রায় ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি জন্ডিসের মতো লক্ষণ। খিদে পাচ্ছে না, চলাফেরায় অনিহা, প্রস্রাব অনিয়মিত, চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এমন অবস্থায় প্রায় দু সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে ঘরের মধ্যে পড়ে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। একজনের হচ্ছে তো আরেকজনের লেগে যাচ্ছে।
এদিকে, গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ ওই এলাকায় মুরগির হ্যাচারি থাকার দরুন মাছির উৎপাত ছিল। সেই থেকেই জ্বর সহ নানা রোগে আক্রান্ত স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ ব্যাপারে রবিবার রাজগঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডক্টর রাহুল রায় বলেন, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে আমরা সতর্ক করছি, যাতে তারা জলটা অন্তত ফুটিয়ে খান। সেইসঙ্গে মাঠে-ঘাটে যাতায়াত করার আগে যেন অবশ্যই জুতো ব্যবহার করেন। কারণ এই রোগের জীবাণু শরীরে খোলা আঘাত থাকলে তার মাধ্যমে সংক্রামিত হয়। মাছির মাধ্যমেও এই রোগ ছড়ায়। গ্রামে গঞ্জে যদি কেউ খোলা জায়গায় মলমুত্র ত্যাগ করেন তাহলে সেখান থেকে মাছি উড়ে এসে খাবারে বসলে তাতেও এই রোগ ছড়ায়।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে খুব একটা ভালো এমনটা বলার কোনও অবকাশ নেই এই মুহূর্তে। তবে আমরা চেষ্টা করছি যাতে মানুষের মধ্যে এই রোগ এবং রোগ নিয়ে আতঙ্ক কমানো যায়।
ওই গ্রামের বেশ কয়েকজন, এদিন হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলেন, তাঁদের অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি। এলাকায় হ্যাচারির জন্যই এই সমস্যা। যেন মহামারি লেগে গেছে। অবিলম্বে সেই হ্যাচারি বন্ধের দাবিতে আন্দোলন হবে বলে তাঁদের হুঁশিয়ারি স্পষ্ট।
- রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটা অঞ্চলে লেপটোস্পাইরোসিস ও হেপাটাইটিসের উপসর্গে আক্রান্ত বহু মানুষ। ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, জন্ডিস—ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্বেগ। সন্ন্যাসীকাটা অঞ্চলে মেডিকেল ক্যাম্পে রোগীদের ভিড়, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।