‘স্যার, পাথর খসে পড়ছে!’ পড়ুয়ার কথা শুনে ধমক দেন শিক্ষক, তারপরই বিপর্যয়… ৭ শিশু পড়ুয়ার মৃত্যু

ঝালাওয়ার: সকালে স্কুল শুরু হওয়ার আগে প্রেয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল বাচ্চারা, তখনই দেখা যায় ছাদ থেকে পাথর খসে পড়ছে, একটু একটু করে। ‘স্যার, ওপর থেকে কি যেন ভেঙ্গে পড়ছে!’, বাচ্চাদের সেই সতর্কবার্তা কানেই তোলেননি ‘পোহা খেতে’ থাকা শিক্ষক। উল্টে বাচ্চাদের ধমক দিয়ে বলেন, কিছুই পড়ছে না। এর কিছুক্ষন পড়ই মারাত্মক ঘটনা।

রাজস্থানের ঝালাওয়ারে সরকারি স্কুলের ছাদ ধসে এখনও ৭টি বাচ্চা ছেলেমেয়ের প্রাণ চলে গেছে। নিহতদের মধ্যে ৬  বছরের শিশু থেকে ১২ বছরের প্রিয়াঙ্কা-পায়েলরা রয়েছে। আহত আরও ২৭ জন। সেই ঘটনায় নতুন তথ্যে তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় উপস্থিত এক ছাত্রী জানিয়েছেন, তিনি ও তার সহপাঠীরা ছাদের থেকে খসে পড়া পাথরের টুকরো দেখতে পেয়ে শিক্ষককে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু শিক্ষক তাদের কথাকে গুরুত্ব না দিয়ে বলেন, “কিছুই পড়ছে না।” কয়েক মিনিটের মধ্যেই ছাদ ধসে পড়ে, যার ফলে সাতজন শিশু ছাত্রছাত্রী প্রাণ হারায় এবং অন্তত ২৭ জন গুরুতর আহত হন।

ওই ছাত্রীর বর্ণনা অনুযায়ী, স্কুলে পৌঁছনোর পরে শিক্ষক তাদের প্রার্থনার জন্য ক্লাসরুমে অপেক্ষা করতে বলেন। শিক্ষক সেই সময় “পোহা খাচ্ছিলেন”।

ইতিমধ্যেই পাঁচজন স্কুল স্টাফকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং মুখ্যমন্ত্রী ঘটনার পরপরই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, কোনও স্কুল ভবন যেন এখন থেকে আর জীর্ণ অবস্থায় না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। এদিকে, জেলা প্রশাসক অজয় সিং জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগেই শিক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, জীর্ণ ভবনের তালিকা জমা দিতে। কিন্তু দুর্ঘটনাগ্রস্ত স্কুলটির নাম সেই তালিকায় ছিল না বলে দাবি।

স্কুলের ঘটনায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উভয়েই দুর্ঘটনাটিকে “মর্মান্তিক” বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং শোকাহত পরিবারগুলিকে শক্তি ও সহানুভূতির বার্তা পাঠিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি, প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সাহায্য করছে।”

About The Author