পিতৃবিয়োগের খবর পেয়েও কর্তব্যে অবিচল! হুগলির ডাক্তারবাবু মনে করালেন ‘অগ্নীশ্বর’-কে

চুঁচুড়া: পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় যেন বাস্তবের এক ‘অগ্নীশ্বর’ হয়েই ধরা দিলেন। শুক্রবার সকালেও রোজকার মত রুটিন মেনেই নিজের চেম্বারে রোগী দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়েই আচমকা খবরটা পেলেন। পিতৃবিয়োগের খবর—তাঁর বাবা তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছেন।

চেম্বারে তখন রোগীতে ঠাসা, অনেকেই এসেছেন দূর-দূরান্ত থেকে। রোগীর মুখের দিকে চেয়ে হৃদয়ের শোককে আড়াল করলেন চিকিৎসক। তাঁদের ফেরত পাঠাতে মন মানেনি। তাই ব্যক্তিগত শোকের মুহূর্তেও রোগী দেখা চালিয়ে যান তিনি। সেবা শেষে বাবার মরদেহের পাশে দাঁড়াতে যান শেষবারের মতো।

স্থানীয়রা বলেন, এমন ঘটনা তাঁদের জন্য নতুন নয়। রাত দু’টো-তিনটে পর্যন্ত রোগী দেখা তাঁর কাছে স্বাভাবিক। কেউ দরিদ্র হলে, তিনি চিকিৎসা করলেও টাকা দাবি করেন না। শুধুমাত্র রোগী সুস্থ হোক—এই একটাই ভাবনা তাঁর।

চুঁচুড়া পুরসভার কাউন্সিলার ইন্দ্রজিৎ দত্ত জানান, “অনেক গরীব মানুষ শিবাশিসবাবুর কাছে আসেন। তাঁর কাছে এসে কেউ খালি হাতে ফেরে না। আমরা ওঁর মতো মানুষের জন্য গর্ব অনুভব করি।”

একজন মানুষের পেশা যখন সত্যিকারের মানবসেবায় পরিণত হয়, তখন তিনি শুধু একজন ডাক্তার নন—একজন প্রেরণা। হুগলির মাটি, মূল্যবোধ আর মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় যেন সেই নীরব ডাক্তার, যাঁর কর্তব্যে নেই ছেদ।

About The Author