বংশ পরম্পরায় দিনহাটায় বসবাস করলেও, ৫০ বছর বয়সে এসে এক নজিরবিহীন সমস্যার মুখে পড়েছেন দিনহাটার উত্তম কুমার। অসম সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করে NRC-র নোটিশ পাঠানো হয়েছে, যা নিয়ে সীমান্ত এলাকায় তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ।
কোচবিহারের বাইরে কখনও না যাওয়া সত্ত্বেও অসমের এই নোটিশ উত্তম বাবুর জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। গত জানুয়ারি মাসে পুলিশ মারফত উত্তম কুমারের বাড়িতে অসমের NRC সংক্রান্ত একটি চিঠি এসে পৌঁছায়। প্রতিবেশীদের সহায়তায় তিনি জানতে পারেন, সেই নোটিশে তাঁকে ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে ‘অবৈধভাবে অসম সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি দিনহাটার সাদিয়ালের কুঠিতে বসবাস করছেন বলেও উল্লেখ আছে।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ ভেরিফিকেশনে তিনি নাকি বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি, তাই তাঁকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী ১৫ই জুলাই, ২০২৫-এর মধ্যে উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে না পারলে তাঁকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চূড়ান্তভাবে চিহ্নিত করা হবে বলেও নোটিশে বলা হয়েছে।
এই বিষয়ে উত্তমবাবুর আইনজীবী অপূর্ব সিনহা বলেন, “যদিও NRC মামলা অসম সরকার ২০১৫ সালে শুরু করে, কিন্তু সেই চিঠি ২০২৪-এর শেষে কোচবিহার পুলিশ সুপারের দপ্তরে পৌঁছায়, যা ২০২৫ সালে উত্তমবাবুর কাছে পাঠানো হয়।” তিনি প্রশ্ন তুলেছেন—যেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার NRC মানে না, সেখানে কীভাবে অসমের নোটিশ রাজ্যে স্বীকৃত পেল?
এ ঘটনায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “উত্তমবাবু তফসিলি জাতিভুক্ত ভারতীয় নাগরিক। কামরূপের এসপি কীসের ভিত্তিতে চিঠি পাঠিয়েছেন, সেটাই প্রশ্ন।” তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এই ইস্যুতে প্রশাসনিক স্তরে পূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।