প্রবল বর্ষণ, হরপা বান এবং ধস মিলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়েছে হিমাচলপ্রদেশ। রাজ্যের ১২টি জেলার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে প্রকৃতির ধ্বংসযজ্ঞ।
সরকারি তথ্য বলছে, ২০ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত সময়ে রাজ্যজুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫১ জন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২২ জন। রাজ্যের মান্ডি জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত—এই জেলাতেই মারা গিয়েছেন ১০ জন, নিখোঁজ ৩৪ জন। মূলত হরপা বান এবং ক্লাউডবার্স্টের কারণেই সেখানে এত প্রাণহানি ঘটেছে।
হিমাচলের রাজস্ব দপ্তরের অধীন স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (SEOC) এক সমন্বিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, মৃতদের মধ্যে কেউ ফ্ল্যাশ ফ্লাডে, কেউ ধসে, কেউ বজ্রপাতে, আবার কেউ রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। ১০৩ জন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন।
শুধু প্রাণহানি নয়, সম্পত্তির ক্ষতিও ভয়াবহ। এই কিছুদিনের মধ্যেই ২০৪টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ২২টি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। ধ্বংস হয়েছে আরও ৮৪টি দোকান, গোহাল ও শ্রমিকের ঘরবাড়ি। ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ₹৮৮.০৩ লক্ষ।
কিন্তু এর চেয়েও বেশি ক্ষতি হয়েছে সরকারি পরিকাঠামোর। পিডব্লিউডি, জল শক্তি বিভাগ এবং বিদ্যুৎ ক্ষেত্র-সহ একাধিক ক্ষেত্রে ক্ষতির অঙ্ক ছুঁয়েছে ₹২৮৩.৩৯ কোটি টাকা।
এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারানোদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে কাংড়া জেলায় (১৩ জন)। চাম্বা ও মান্ডিতে ৬ জন করে, কুল্লুতে ৪, আর শিমলা, কিন্নর, উনা, সোলান ও সিরমৌর জেলায় কিছু কম প্রাণহানি হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। চালু রয়েছে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম। বিপর্যয়ের মধ্যে আটকেপড়া পর্যটকদের উদ্ধারে NDRF ও SDRF-এর দল কাজ শুরু করেছে। দুর্গতদের সাহায্যার্থে চালানো হচ্ছে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম।
মানুষের জীবন ও জীবিকা দুটোই যখন একসঙ্গে ধাক্কা খায়, তখন তা শুধুই একটি আবহাওয়ার খবর থাকে না—থেকে যায় এক গভীর রাষ্ট্রিক ও মানবিক সংকটের দলিল। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল। মনিটরিং চলছে প্রতিটি জেলার অবস্থার উপরে।