কাঁদতে কাঁদতে বাবা বলেই ফেললেন, ‘মেয়ের শরীরের একটা টুকরো অন্তত যদি পাওয়া যেত তবে শেষ কাজটা ভালোভাবে করা যেত।’
কুকি-মেইতেই সংঘাতে উত্তপ্ত মণিপুর। অথচ হাসিমুখে দুই জাতের মেয়ে মিলিয়ে দিয়ে গেল মনিপুরকে। এয়ার ইন্ডিয়ার সেই বিমানে ছিলেন মণিপুরেরই দুই মেয়ে। তাঁদের একজন কুকি ও অন্যজন মেইতেই সম্প্রদায়ের কন্যা।
মণিপুরের থৌবাল শহরে, ২১ বছর বয়সী নগান্থোই শর্মা ওই বিমানের কেবিন ক্রুদের মধ্যে একজন ছিলেন।
এদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিনি তার বড় বোনকে ফোন করে জানান, তিনি লন্ডনে যাচ্ছেন। তাই আগামী কদিন ফোনে হয়ত যোগাযোগ হবে না। ১৫ জুন ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু সকাল ১১টার ফোনে ওই কথাই যে শেষ কথা ছিল তা কেউ ভাবতে পারেনি, জানাল শোকাতুর বাবা নন্দেশ কুমার শর্মা।
কান্না জরানো গলায় তিনি বলেই ফেললেন, তাঁর মেয়ের শরীরের একটা টুকরো অন্তত যদি পাওয়া যেত তবেই তো শেষ কাজ টা ভালো ভাবে করতে পারতেন।
বৃহস্পতিবারের ওই সকালে ফোনালাপের প্রায় তিন ঘন্টা পরে, তার বড় মেয়ে বিমান দুর্ঘটনার খবর দেখে আতঙ্কিত হয়ে তাকে ফোন করেন। কিন্তু সেই ফোন আর কেউ রিসিভ করেননি।
পরিবার সুত্রে জানা গেল, নগান্থোই ২০২৩ সালে তার প্রথম চাকরি হিসেবে এয়ার ইন্ডিয়ায় বিমান সেবিকার কাজে যোগ দিয়েছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৯। তার কিছু বন্ধু এয়ার হোস্টেসের জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। তবে ইন্টারভিউয়ের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল নগান্থেই।
বাবা আক্ষেপ করে বলছেন, এখন কতই বা তাঁর বয়স। আমি ভেবেছিলাম যে, যখন সে বড় হবে, তখন সে মণিপুরেই একটা স্থায়ী কাজ করবে। ছুটি পেলে মেয়েটা দুম করে চলে আসত, এখন আর দেখা হবে না।
একই রকম গল্প লামলুনথেন সিমসনের পরিবারেরও। তার বয়স ওই একইরকম। সেও কাজ করছিল বিমান সেবিকা হিসেবেই। ওই ঘটনায় তারও মৃত্যু হয়েছে বলেই খবর এসেছে। এই ঘটনা অন্তত ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে সবমিলিয়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেহ, বলা ভালো, দেহাংশের অবস্থা এতটাই খারাপ, যে ডিএনএ-র নমুনা ম্যাচ না হলে কোন লাশ কার, বলা যাচ্ছে না।