মালদা: মাটির ঘরের দেওয়ালে এখনও উজ্জ্বল গোলাপি রঙে লেখা ‘শুভবিবাহ। তিন মাসও হয়নি, অগ্নিসাক্ষী করে একসঙ্গে জীবন কাটানোর শপথ নিয়ে নতুন সংসার শুরু করেছিলেন দুজনে। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাতে এক লহমায় সব শেষ হয়ে গেল।
বজ্রাঘাতে মারা গেলেন বছর ২৪-র নয়ন এবং স্ত্রী বছর ২০-র প্রিয়াঙ্কা। সেই বিকেলে মাঠে পাট নিড়াতে গিয়েছিলেন নবদম্পতি। আচমকা ওঠে ঝড়-বৃষ্টি। কালো মেঘে ছেয়ে যায় আকাশ। বাড়িতে ফেরার আগেই বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় মালদার খেজুরবাড়ি এলাকার ওই দম্পতির। ময়নাতদন্তের পর ছেলে ও ছেলেবউয়ের দেহ বাড়িতে ফিরতেই কান্নার রোল ওঠে। পাড়া-প্রতিবেশীদের বিলাপ, জীবনটা সবে শুরু করেছিল। তার আগেই সব শেষ। হয়ে গেল।
এদিন সন্ধ্যায় শেষকৃত্য হয়েছে বজ্রাঘাতে মৃত ওই দম্পতির। গোটা বাড়ি গ্রাস করেছে শ্মশানের নিস্তব্ধতা। তারই মধ্যে নজর কাড়ছে বিয়ের অনুষ্ঠানের চিহ্ন হিসেবে নয়নের ঘরের দরজার পাশে লাল রঙে আঁকা আলপনা। শূন্য দৃষ্টিতে সেদিকেই চেয়ে ছিলেন নয়নের মা সুমিয়া রায়।
‘দু’বছর আগে মারা গিয়েছেন বাবা। নয়নের সঙ্গেই থাকতেন বৃদ্ধ মা। সংসারে নয়নই ছিলেন একমাত্র রোজগেরে। বিয়ের সময় মায়ের নামে ৩০ হাজার টাকা লোন নিয়েছিলেন। সেই টাকার কিছুটা দিয়ে শ্বশুরবাড়ি কুর্শাডাঙিতে জমি লিজ নিয়ে পাট চাষ করেছিলেন নয়ন। সেই জমিতেই নিড়ানি দিতে গিয়ে বাজ পড়ে মৃত্যু হয় স্বামী-স্ত্রীর। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পরিবার দুটিকে শুক্রবার দু লক্ষ করে দুটি চেক দেওয়া হয়।