বয়স্ক-অসুস্থ সাপকে নিয়ে ‘মা মনসার’ গুজব, গ্রামে ভিড় বাড়ছে, প্রণামীর নামে জমছে টাকা

গ্রামে রোজই নিয়ম করে আসছে একটি সাপ। চুপ করে একজায়গায় পরে থাকে শুধু। খায়না, নড়েও না। আর সেই সাপকে ঘিরেই মা মনসার নামে বাড়ছে ধর্মীয় উন্মাদনা। সাপটিকে দেখতে আশেপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রতিদিন জড়ো হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। দুধ জল আলতা সিঁদুর দিয়ে পূজা করছে মা মনসাকে। বিজ্ঞান বলে, সাপটি সম্ভবত বয়স্ক এবং অসুস্থ। সাপটিকে উদ্ধার না করলে মরে যাবে আর এই নিয়ে গ্রামে ধর্মের নামে শুরু হবে নতুন ব্যবসা।

কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের বাঙ্গিটোলা অঞ্চলের সুকুল্যাপুর গ্রামে এই সাপকে ঘিরে বাড়ছে ধর্মীয় উন্মাদনা। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে নতুন মা মনসা মন্দির তৈরীর। স্থানীয় সকুল্লাপুর মনষা মা মনসা মন্দির কমিটি র সদস্যরা জায়গাটি বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। এলাকাটিতে বসানো হয়েছে লাল কাপড় ও সোলার সাপ। আলতা সিঁদুর, টাকা ও দুধ দিচ্ছে মা মনসা’কে। সাপ পুজোকে কেন্দ্র করে বেহিসেবি টাকা উঠছে। প্রতিদিনের টাকা জমা হচ্ছে মা মনসা মন্দির কমিটিতে। সেই টাকা দিয়ে মন্দির তৈরি করান হবে বলে জানান স্থানীয়রা।

সাপকে কেন্দ্র করে বাড়ছে ভিড়। সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়াবার সম্ভাবনা বাড়ছে। স্থানীয় মানুষ সাপটিকে বনদপ্তর এর হাতে তুলে দিতে না চাইলেও ও মালদা জেলার বিশিষ্ট সর্প বিশেষজ্ঞ নিতাই হালদার স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি এই সাপটিকে দেখেছেন। সাপটি সম্ভবত দোহোসলা বা গহূমা প্রজাতির। সাপটি বয়স্ক ও অসুস্থ। তাই খুব শীঘ্রই সাপটি বনদপ্তর এর হাতে তুলে না দিলে এবং চিকিৎসা না হলে সাপটি মারা যেতে পারে। বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক সুনীল দাস জানিয়েছেন, ‘সাপটি অসুস্থ এবং বয়স্ক। সাপ দুধ খায় না। সাপটিকে নিয়ে বুজরুকি শুরু হয়েছে সবাই। ঘটনাস্থলে গেলে সাপটিকে উদ্ধার করতে বাধা দেয় মানুষ। কুসংস্কার নিয়ে মেতে উঠেছে গ্রামের আম জনতা।

About The Author