জলপাইগুড়ি: কিছু না করেও স্কুলের তরফে মিথ্যে অপবাদ সহ্য করতে পারছিলাম না। একটা মেয়ের কথায় আমার জীবনে কলঙ্ক লেগে গেল। কেউ বিশ্বাস করল না। স্কুল কর্তৃপক্ষের কেউ বুঝলেন না। সবাই মিথ্যে অপবাদ দিলেন। এক পাতা জুড়ে খেদ লিখে বাড়িতেই গলায় দড়ি দিয়ে নিজের জীবন শেষ করে দিল ১৪ বছরের এক নাবালিকা।
স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার জলপাইগুড়ি ৭৩ মোড় সংলগ্ন দেবনগর এলাকায়। সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতি হয়েছে স্কুল ছাত্রী, দাবি পরিবারের। সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, নিজের স্বার্থে তাঁর এক সহপাঠী তাঁকে কলঙ্কিত করেছে। চিঠির মধ্যেই ছাত্রী লিখেছে, কী ভাবে মুখ দেখাব স্কুলে! এই জীবন রাখার চেয়ে না রাখাই অনেক ভাল।’
জানা গিয়েছে, ছাত্রীর নাম শ্রেয়া ঘোষ। ক’দিন আগে স্কুলের পরীক্ষায় এক সহপাঠি শ্রেয়ার বিরুদ্ধে পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ করে স্কুলে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাই ধরে নিয়ে মানসিক ভাবে শ্রেয়াকে হেনস্থা করেছে। শ্রেয়া লিখেছে, কিভাবে স্কুলে সবার সামনে সে নিজের মুখ দেখাবে। তাই সে নিজের জীবন রাখবে না। এই লিখে গলায় দড়ি দিয়েছে বছর ১৩-র শ্রেয়া।
ঘটনায় পরিবারের তরফ থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং তাঁর এক সহপাঠীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার কথা জানানো হয়েছে। শ্রেয়ার এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘একটা অসত্য কথায় অপমানিত হয়ে ছোট্ট মেয়েটি আত্মঘাতী হল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই প্রাণ যাওয়ার পিছনে তিন জন দায়ী। এক জন ছাত্রীর সহপাঠিনী। কারণ, সে পরীক্ষার সময় শ্রেয়ার কাছে উত্তরপত্র দেখতে চাইছিল। কিন্তু শ্রেয়া নিজের পরীক্ষার খাতা জমা দিয়ে বেরিয়ে যায়। এর পর ওই সহপাঠিনী গিয়ে শিক্ষিকার কাছে অভিযোগ করে যে শ্রেয়া পরীক্ষায় নকল করেছে। ওই কথার ভিত্তিতেই শিক্ষিকারা শ্রেয়াকে মানসিক নির্যাতন করেন। কিন্তু শ্রেয়ার কাছ থেকে কোনও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। তা সত্ত্বেও শিক্ষিকারা বার বার জোর দেন যে তোমাকে স্বীকার করতেই হবে যে, তুমি নকল করেছ।’’