বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীকে ‘বাপের হোটেল’ উপহার দিলেন স্বামী, কারা খেতে আসছে জানেন?

তমলুক: স্ত্রীকে চমকে দিতে এবং প্রচণ্ড দাবদাহে জীব সেবার জন্য অভিনব পরিকল্পনা নিলেন এক শিক্ষক। পশু পাখিদের জন্য‌ হোটেল, এও সম্ভব হ্যাঁ এমনই এক উদ্যোগ নিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের এক শিক্ষক। প্রকৃতিকে সুন্দর ও সুস্থ রাখতে পশুপাখির অবদান অপরিসীম। আর তাদের সুন্দর জীবন যাপনের জন্য এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি ১ ব্লকে কুলাইপদিমা নিম্ন বুনিয়াদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শ্যামল জানা। গত 25 এপ্রিল শ্যামল বাবুর বিবাহবার্ষিকী ছিল। সেদিন থেকেই কাঁথির আঠিলাগাড়িতে পশু পাখিদের জন্য একটি হোটেল চালু করেন তিনি। যার নাম দিয়েছেন “বাপের হোটেল”। প্রথম দিন থেকে প্রচুর ভিড় সেখানে কারণ গরমে পশুপাখির সবার অবস্থা খুবই খারাপ।

বাপের হোটেলে যথেষ্ট খাবার ও পানীয় জল পেয়ে ওরা প্রাণে বাঁচছে। ওদের জন্য থাকছে কলা, আঙ্গুর, শসা কাঁচাছোলা, গম ,সূর্যমুখী বীজ, ভুট্টা, বাদাম এবং অবশ্যই পানীয় জল। খাবার গুলি পরিবেশন করা হয় রঙ বাহারি নকশা করা মাটির নানা মাপের পাত্রে বাড়ির খোলা ছাদে এই হোটেল 24 ঘন্টা খোলা দড়িতে হুনমান দের জন্য সাজানো থাকে পাকা কলা।

শ্যামল জানা সারা বছরই নানা সমাজসেবামূলক কাজ করেন। কখনো দুস্থদের প্রসাদ দেন কখনো বন্যা বা ঝড় বিধ্বস্ত দের ত্রিপল। বিভিন্ন জেলায় 5000 বট-অশথের চারাও রোপন করেছেন। ‘বাপের হোটেল’ প্রসঙ্গে শ্যামল জানা বলেন আমি সামান্য প্রাথমিক শিক্ষক। বিবাহবার্ষিকীতে দামি উপহার দেওয়ার সাধ্য নেই। স্ত্রীকে খুশি করতে প্রচণ্ড দাবদাহে জীব সেবার জন্য এমন পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে প্রাথমিক শিক্ষকের এহেন কাজ বেজায় খুশি এলাকার মানুষ থেকে পশু প্রেমীরা। স্থানীয়দের বক্তব্য মানুষদের জন্য রাজ্য থেকে দেশ-বিদেশ অজস্র হোটেল রয়েছে। সকলে মানুষের কথাই ভাবেন। এই নিরীহ পশুপাখি গুলোর কথা কেউ ভাবেন না। পশু পাখিদের কথা ভেবে শ্যামল বাবু যে হোটেল খুলেছেন, এটা খুবই শুভ উদ্যোগ। তাঁকে দেখে আরো পাঁচজন শিখবে। হয়তো আগামী দিনে আরও অনেকে এই ধরনের উদ্যোগ নেবেন। আর বিবাহ বার্ষিকীতে উপহার স্বরূপ কত দামী জিনিসই না স্বামীরা স্ত্রীদের দিয়ে থাকেন। বা অনেকে হয়তো কিছুই দেন না। তবে বিবাহ বার্ষিকীতে এ ধরনের উপহার একেবারে আলাদা। একেবারে অন্যরকম তা বলা বাহুল্য। এই হোটেলের খাবার বা জল খেতে শ্যামল বাবুর বাড়ির ছাদে এবার পশুপাখিদের নিত্য আনাগোনা লেগেই থাকবে। যা এলাকার মানুষ ও দেখতে পারবেন।

About The Author