জলপাইগুড়ি: বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে বিধায়কের ‘অন্যায় অভিযোগ’ নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। লকডাউনে বিজেপি নেতাদের মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি, বিধায়কের এমন মন্তব্যে বেজায় চটেছে বিজেপি নেতৃত্ব। বিধায়ক ‘ভুলভাল’ বলছেন, অভিযোগ বিজেপির। লকডাউনে বিধায়ক ও তৃণমূলের নেতারা নিজেরাই চাল চুরিতে ব্যস্ত ছিলেন, বিস্ফোরক অভিযোগ শ্যাম প্রসাদের।
শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন, বিজেপির নেতারা করোনার ভয়ে ঘরে বসে রয়েছেন, মানুষকে সাহায্য করতে বাইরে বেরোনোর সাহস তাদের নেই। এ প্রসঙ্গে পাল্টা অভিযোগ করেন বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি শ্যাম প্রসাদ। তিনি বলেন বিধায়ক ও তৃণমূল নেতারা হয়ত চাল চুরিতে ব্যস্ত ছিলেন, সে কারণেই বিজেপি নেতাদের রাস্তায় দেখতে পাননি।
বিজেপি নেতাদের কাজ নিয়ে শ্যাম প্রসাদ বলেন, লকডাউনে প্রতিনিয়ত পথে নেমে এসে গরীব মানুষগুলিকে সাহায্য করেছে বিজেপি কর্মীরা। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্যও বিভিন্ন সদর্থক কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। শ্যাম প্রসাদ আরও বলেন, বিধায়কের বয়স হয়েছে, তাই তিনি ‘ভুলভাল’ বলছেন। তিনি যা বলছেন, তার ‘স্ক্রিপ্ট’ মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করে দিচ্ছেন। বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর শেখানো বুলিই আওড়াচ্ছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগগুলিকে তুলে ধরতে শনিবার রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাকক্ষে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন। এদিন ওই বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, করোনা রোধে রাজ্য সরকার সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে অসহায় মানুষদের সাহায্য করার পাশাপাশি দলের নেতা-কর্মীরাও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে লাগাতার সাহায্য করে যাচ্ছেন। সেইসঙ্গে করোনা নিয়ে সতর্কতামূলক প্রচারও করা হচ্ছে।
কিন্তু বিজেপির নেতারা করোনার ভয়ে ঘরে বসে রয়েছেন। এদিন বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করে বিধায়ক বলেন, করোনা সংকটে অসহায়দের সাহায্য করছে না বিজেপি নেতা-কর্মীরা। করোনা নিয়েও কোনও প্রচারও করছে না। ঘরে বসে শুধু তৃণমূল নেতাদের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করছেন তাঁরা। বিধায়কের এমন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার বিজেপির নেতা-কর্মীরা।
এদিকে বিধায়ক আরও অভিযোগ করে বলেছিলেন, লকডাউনে চলা বিজেপির অহেতুক বিক্ষোভ ও অন্যান্য কর্মসূচিতে সামাজিক দূরত্ব না মানার কারণেই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এখানে প্রশাসনের সঙ্গে বিধায়কের কোন যোগসাজশ নেই। যদিও এর প্রত্যুত্তরে অনেক বিজেপি নেতারা অভিযোগ করে বলেছেন, বিধায়ক বা অন্যান্য তৃণমূল নেতারা বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী বিলি অনুষ্ঠানে রোজ নিয়ম করে সামাজিক দূরত্ব ও লকডাউন বিধি ভাঙছেন। সে ছবি মানুষ দেখেছে।
বিজেপির অভিযোগ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা সত্ত্বেও বিজেপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে বিধায়ক বলেন সরকারের পক্ষ থেকে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা এমনকি তিনি নিজেও ব্লকের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিলি করেছেন। বিজেপি নেতারা কোনও কাজ করেনি।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তপন রায় অভিযোগ করে বলেন, বিধায়কের নিজের এলাকাতেই বহু মানুষ রেশনসামগ্রী পাচ্ছেন না। সে খবর কি বিধায়ক রাখেন? বিধায়কের অভিযোগ এবং বিজেপির পাল্টা অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে ব্লক ও জেলার রাজনৈতিক মহলে। করোনা পরিস্থিতিতে অহেতুক রাজনীতি না করে সম্মিলিতভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ব্যাপারেই সহমত প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা।
https://www.facebook.com/RNFNewsOfficial/videos/1529575380544247/