বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ধর্না যুবতীর, বেপাত্তা যুবকের পরিবার

রাজগঞ্জ: পাঁচ বছর ধরে প্রেম, বিয়ের কথা বলে শারীরিক সম্পর্কেরও অভিযোগ। এতদূর এসেও শেষ অবধি বিয়েতে ‘না’ প্রেমিকের। বাধ্য হয়ে ওই যুবকের দুয়ারে ধর্নায় বসলেন প্রেমিকা। দু-তিনদিন ধরে যুবকের বাড়ির বারান্দায় ধর্না দিয়ে বসে রয়েছেন যুবতী। এদিকে ধর্না দেওয়ার আগে থেকেই কোনওভাবে খবর পেয়ে বেপাত্তা বাড়ির লোকজন। পাত্তা নেই অভিযুক্ত যুবকেরও। রাজগঞ্জ ব্লকের ফাটাপুকুরে বিয়ের দাবিতে এক যুবতীর ধর্না দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় আলোচনা শুরু হয়েছে।

মেয়েটি জানায়, ফাটাপুকুরের স্থানীয় বাসিন্দা কৌশল ধারার ছেলে কুন্তল ধারার (২৪) সঙ্গে গত ৫ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। দেড় বছর আগে বিয়ের কথা বলে রেজিস্ট্রি হয় দু’জনের। এরপর থেকেই তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয় বলে দাবি। এরপর থেকেই বিয়ের দাবি নিয়ে মাঝে মধ্যেই কুন্তলকে জোর করতে থাকেন। ৬ মাসের মধ্যে দু’জনের বিয়ের কথা থাকলেও সেই বিয়ে নিয়ে বছর পেরিয়ে গেলেও কোনও সিদ্ধান্তে আসেননি কুন্তল।

অবশেষে যুবতীকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয় কুন্তলের তরফে। এরপর থেকেই বিয়ের দাবিতে যুবকের বাড়িতে এসে ধর্না দিয়ে পড়ে রয়েছেন যুবতী এবং তাঁর মা। দু’দিন ধরে ধর্না দিয়ে বসে থাকলেও বাড়ির কেউই যোগাযোগ করেননি বলে অভিযোগ। যুবতীর আরও দাবি, কুন্তল এবং তার পরিবারের কেউই ফোন ধরছেন না। এই ব্যাপারে কুন্তলের নাম্বার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন সুইচঅফ থাকায় যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

রাজগঞ্জ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা সহ সভাপতি তথা ওই যুবকের আত্মীয়া শর্বাণী ধারা বলেন, যদি মেয়েটির সঙ্গে কুন্তলের রেজিস্ট্রি হয়ে থাকে তাহলে বিয়ে হবে আইন মেনেই। যদি কোনও অন্যায় হয় সেক্ষেত্রে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা হোক তাতে উনার কোনও আপত্তি নেই। এই ব্যাপারে আইন অনুযায়ী প্রশাসন যা ব্যবস্থা নেবে তাই হবে। দল প্রসঙ্গে শর্বাণী ধারা বলেন, দলের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্কও নেই এবং কোনও নির্দেশও নেই।

এদিকে, স্থানীয় পঞ্চায়েত অমল কুড়ি বলেন, বিষয়টি তিনি সদ্য জেনেছেন। আইন অনুযায়ী যা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশাসন নিক। যুবতীর কাছে যদি কোনও বৈধ প্রমাণ থেকে থাকে তবে তাই হবে। শনিবার রাতে এই ব্যাপারে রাজগঞ্জ থানায় গিয়েও পরামর্শ করেছেন যুবতী এবং তার পরিবার। যুবতীর দাবি, যুবকের পরিবারের কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না। সকলের ফোন সুইচঅফ বলছে।

যুবতী জানিয়েছে, তার বাড়ি রাজগঞ্জের বলাইগছ এলাকায়। যুবতী মেক-আপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেন। এদিকে, কুন্তল ফাটাপুকুর রেজিস্ট্রি অফিসে কাজ করেন। মেয়েটির দাবি, তার সঙ্গে পাঁচ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সুবাদেই দু’জনের মধ্যে বিয়ের কথা ঠিক হয়। বিয়ের আগে  দুই পরিবারের তরফে বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক ভাবনা ছিল বলে দাবি। কিন্তু এখন তাতে আপত্তি করছে ছেলে।

উপায় না দেখে ধর্নায় বসেছেন মেয়ে এবং মেয়ের মা। তবে দুদিন পেরিয়ে গেলেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় আইনের দ্বারস্থ হওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে যুবতী। তাঁর আরও অভিযোগ, যুবকের পরিবারের লোকেরাও বিয়ের ব্যাপারে মত দেয়নি। নাছোড়বান্দা ওই যুবতী শীতের রাতেও দু’রাত ধরে ধর্না দিয়ে বসে রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে তাঁর মা।

কুন্তল ধারা’র সঙ্গে যুবতী (অভিযোগকর্তা)

About The Author