মালদা: চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতিবন্ধী এক যুবকের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির যুব মোর্চার এক নেতার বিরুদ্ধে। চরম অসহায়তার মধ্যে পড়ে প্রতিবন্ধী ওই যুবক ও তার পরিবার বারবার বিজেপির যুব মোর্চার নেতার বাড়িতে ঘুরেও চাকরির কোন প্রতিশ্রুতি পান নি। এমনকি টাকা ফেরত চাইতে গেলে ওই প্রতিবন্ধী যুবককে রীতিমতো হমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই ব্যাপারে সুবিচারের আশায় ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে চান প্রতিবন্ধী যুবক ও তার পরিবার। কিন্তু পুলিশও নানান জটিলতা অজুহাত দেখিয়ে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। অবশেষে শুক্রবার সপরিবারে ওই প্রতিবন্ধী যুবক পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন। সেখানেই সমস্ত ঘটনার কথা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গোটা ঘটনার বিষয়ে ইংরেজবাজার থানার পুলিশকে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। তিনি জানিয়েছেন , অভিযোগের ভিত্তিতে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। প্রয়োজনে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক থানার লালুটোলা এলাকার বাসিন্দা হারাধন দাস (৩২) উচ্চ শিক্ষিত হবার পরেও দীর্ঘদিন ধরে বেকার রয়েছেন। একটি পা তার চলাচলের ক্ষেত্রে সক্রিয় নয়। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র রয়েছে। এরই ফাকে ইংরেজবাজার শহরের নিমাসরাই এলাকার বাসিন্দা ওই বিজেপির যুব মোর্চার নেতার সাথে কোনভাবে পরিচয় হয় ওই প্রতিবন্ধী যুবকের। তাঁকে গনিখান চৌধুরী কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করিয়ে দেওয়ার জন্য দু লক্ষ টাকার প্রস্তাব দেয় বিজেপির ওই যুব মোর্চার নেতা বলে অভিযোগ। মাসখানেক আগে দুই দফায় ৫০ হাজার টাকা করে এক লক্ষ টাকা বিজেপির ওই নেতা নিয়েছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু তারপর থেকে আর ওই প্রতিবন্ধি যুবকের সাথে কোন রকম ভাবেই যোগাযোগ করছেন না। সে টাকা ফেরত পেতে গিয়েই এখন চরম বিপাকে পড়েছেন হারাধন দাস।
এদিন পুলিশ সুপার অফিসে অভিযোগ জানাতে আসেন হারাধন দাস এবং তার স্ত্রী শম্পা দাস। হারাধন দাস বলেন, মালদার গনিখান চৌধুরী কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি করিয়ে দেবে বলে বিজেপির যুব মোর্চার নেতা শিব শংকর পোদ্দার তার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়েছে। বিজেপির নেতা বলেছিল কেন্দ্র সরকারের মাধ্যমে এই কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয়টি চলছে। সেখানেই তার চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে । দিনমজুরের পরিবার হওয়ায় স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করে ওই বিজেপির যুব মোর্চার নেতাকে দেওয়া হয় । কিন্তু তারপর থেকে আর চাকরির কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। টাকা চাইতে গেলে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
হারাধন দাসের আরও অভিযোগ, পুরো ঘটনায় অসহায় তার মধ্যে পড়ে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ নানান জটিলতা অজুহাত দেখিয়ে অভিযোগ নেয় নি। বাধ্য হয়ে সুবিচারের আশায় পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছি। গরীব পরিবার হওয়া সত্ত্বেও অনেক আশা নিয়ে চাকরি পাবো বলে টাকা জোগাড় করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমার সব শেষ । পুলিশ এবং প্রশাসন যদি সাহায্য না করে তাহলে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। যদিও এই ঘটনায় যাকে ঘিরে এত শোরগোল , সেই বিজেপির যুব মোর্চার নেতা শিব শংকর পোদ্দারকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি তার ফোন ধরেন নি । তার কাছ থেকে কোন রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এপ্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল জানিয়েছেন , শিব শংকর পোদ্দার নামে ওই ব্যক্তি আমাদের দলের কোন দায়িত্বে নেই । তবে ওর বিরুদ্ধে কি অভিযোগ হয়েছে তা বলতে পারবো না। এই ধরনের ঘটনা যদি ঘটে থাকে তার জন্য পুলিশ ও প্রশাসন আছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তারা তদন্ত করবে। আমাদের এই ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানা নেই।