আরএনএফ ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার কঠিন সময়েই নিজেদের দেশের দেড় লক্ষাধিক মৃত্যুর কথা মনে রেখেই মঙ্গলের উদ্দেশে পাড়ি দিল নাসার মঙ্গলযান ‘পার্সিভিয়ারেন্স’, যার অর্থই হল, কঠিন সময়েও একনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া। গত ৩১ জুলাই শুক্রবার ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে অ্যাটলাস ফাইভ নামের রকেটে চেপে লালগ্রহে রওনা হল পার্সিভিয়ারেন্স।
মার্স ২০২০ অভিযানে একটি রোভার ও একটি খুদে হেলিকপ্টার, ইনজেনুয়িটি রয়েছে। রোভারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একটি বাক্স, যার ৩টি সিলিকন অ্যানোডাইজড মাইক্রোচিপে লিপিবদ্ধ রয়েছে ১০,৯৩২,২৯৫টি নাম। এর মধ্যে ৮টি নাম গিয়েছে RNF-এর তরফে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই পার্সিভিয়ারেন্সের সঙ্গে পৃথিবী থেকে ৫.৪৬ কোটি কিলোমিটার দূরে মঙ্গলে পৌঁছে যাবে নামগুলি।
মহাকাশ উৎসাহীদের জন্য এমনই অভিনব ভাবনা গতবছরই জানিয়েছিল নাসা। সেইমত নাসার ওয়েবসাইটে গিয়ে গতবছর থেকেই নাম নথিভুক্ত করেছেন অনুরাগীরা। বিমানযাত্রার টিকিটের ধাঁচে নিজের নাম লেখা একটি স্মারকও পেয়েছেন প্রত্যেকেই। ৩টি সিলিকন চিপের ওপর ইলেকট্রন বিমের সাহায্যে লেখা হয়েছে এতোগুলি নাম। তার সঙ্গে রয়েছে ১৫৫টি বাছাই করা প্রচ্ছদও।
রোভারের যন্ত্রাংশে সংগঠিত মোট ৩টি সিলিকনের তৈরি মাইক্রোচিপের গায়ে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে লেখা রয়েছে নথিভুক্ত করা নামগুলি। হরফের সাইজ প্রায় ৭৫ ন্যানোমিটার। একটি কাঁচের কভার সহ চিপগুলি মার্স রোভার পার্সিভিয়ারেন্সের গায়ে আটকানো রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নথিভুক্ত করা নামগুলিই ২০২০ মঙ্গল অভিযানের অংশ হিসেবে পাঠানো হয়েছে। এতে RNF নাম সহ RNF-এর তরফে অন্য ৭টি নামও রোভারের সঙ্গে মঙ্গলের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে।
নাসা জানিয়েছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি লালগ্রহে অবতরণ করবে পার্সিভিয়ারেন্স। এই মঙ্গল অভিযানের খরচ ৮০০ কোটি ডলার। ১.৮ কেজির মিনি হেলিকপ্টার ‘ইনজেনুয়িটি’ মঙ্গলের আকাশপথে অভিযান চালাবে। মাটিতে তদন্ত করবে পার্সিভিয়ারেন্স। এর বিশেষত্ব হল, লালগ্রহে গবেষণা শেষে মঙ্গলের মাটির নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরেও আসবে। মঙ্গলে প্রাণের সন্ধান এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হলেও মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর ব্যাপারে গবেষণা অন্যতম লক্ষ্য। মঙ্গলে পৌঁছে ঠিক কি কি সমস্যা হতে পারে, হদিশ দেবে পার্সিভিয়ারেন্স ও উড়ন্ত ইনজেনুয়িটি।